মাওবাদীদের একটি নতুন আন্তর্জাতিক সংগঠন গড়ার প্রক্রিয়া শুরু

আন্দোলন প্রতিবেদন
বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
অনলাইনের বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, বিশ্বের মাওবাদী বিপ্লবী পার্টি/সংগঠনগুলো নতুন করে পুনর্গঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে এবং একটি নতুন আন্তর্জাতিক কেন্দ্র গঠনের লক্ষ্যে প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তাদের বিভিন্ন উদ্যোগের একটি হলো— ১ মে ২০২৩ উপলক্ষ্যে পার্টি/সংগঠনগুলোর যৌথ বিবৃতি প্রদান। এর আগে ২৪ ফেব্রুয়ারি,’২৩ ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে একটি যুক্ত-বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো কতৃক বিশ্ব যুদ্ধের পাঁয়তারা রুখে দিতে দেশে দেশে বিপ্লবী সংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয় এ বিবৃতিতে। বিবৃতির মূল স্লোগান ছিল—
সাম্রাজ্যবাদী পুঁজিবাদ নিপাত যাক, সমাজতন্ত্র-কমিউনিজম জিন্দাবাদ!
বিপ্লব যুদ্ধকে বন্ধ করবে, নতুবা যুদ্ধ বিপ্লবকে ছড়িয়ে দেবে।
দুনিয়ার সর্বহারা ও জাতি-জনগণ, সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে এক হও!
রুশ-চীন মহাবিতর্কের মধ্য দিয়ে গত শতাব্দীর ৬০-এর দশক থেকে বিশ্বব্যাপী বিপ্লবী কমিউনিস্ট আন্দোলন পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। মাওয়ের নেতৃত্বে চীনে মহান সর্বহারা সাংস্কৃতিক বিপ্লবের প্রভাবে ভারতীয় উপমহাদেশে নকশালবাড়ি আন্দোলন সমাজ রূপান্তরের জন্য রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের বিপ্লবী তত্ত্ব মাওবাদ (তৎকালে মাও চিন্তাধারা) গ্রহণ করেছিলো। একই ভাবে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে/অ লেও এমনটা ঘটেছিলো। কিন্তু তখন একক কোনো আন্তর্জাতিক কেন্দ্র গড়ে উঠেনি। মাও-এর মৃত্যু, চীনে সংশোধনবাদীদের রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সংশোধনবাদী (পুঁজিবাদী) লাইন গ্রহণ, বিশ্বব্যাপী পুনরায় মতাদর্শগত মহাবিতর্ক– ইত্যাদি কারণে চতুর্থ আন্তর্জাতিক কেন্দ্র গঠনের উদ্যোগে বিলম্ব ঘটে।
তা সত্ত্বেও গত শতাব্দীর আশির দশকে চতুর্থ আন্তর্জাতিক এর প্রস্তুতি সংগঠন হিসেবে “বিপ্লবী আন্তর্জাতিকতাবাদী আন্দোলন” (রিম) গঠন ছিলো তাৎপর্যপূর্ণ। মাও-এর মৃত্যু পরবর্তীতে এই কেন্দ্র প্রায় চার দশক পর পুনরায় একটি কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিক গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। তারা তাত্ত্বিকভাবে মাওবাদ গ্রহণ করে, গণযুদ্ধের সর্বজনীনতা গ্রহণ করে এবং একটি আন্তর্জাতিক সাধারণ লাইন গড়ে তোলার পথে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি ঘটায়। রিম পেরু, নেপালের অগ্রসর গণযুদ্ধের অভিজ্ঞতাকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে গৌরবোজ্জল ভূমিকা রেখেছিলো।
দুঃখজনক হলো যে, রিমের অন্তর্ভুক্ত সংগঠনগুলোর মধ্যে বিভিন্ন লাইনগত গুরুতর মতপার্থক্য সৃষ্টি হয়। পেরু পার্টিতে গণযুদ্ধ বিরোধী তথাকথিত শান্তি লাইনের আবির্ভাব, নেপাল পার্টির প্রচন্ড-ভট্টরাই চক্রের বিশ্বাসঘাতকতা এবং আমেরিকান কমিউনিস্ট পার্টির বব এ্যাভাকিয়ানের “নয়া কমিউনিজম” তত্ত্ব রিমকে অকার্যকর করে ফেলে।
‘রিম’ অকার্যকর হয়ে যাবার পর থেকে বিশ্বের আন্তরিক মাওবাদীরা পুনরায় একত্রিত হওয়া এবং একটি ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম বা আন্তর্জাতিক গড়ে তোলার কঠোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। সমসাময়িককালে বিশ্বব্যাপী ফ্যাসিবাদের উত্থান, শ্রমিকশ্রেণি ও জনগণের উপর এক সর্বব্যাপী আক্রমণ, মানবজাতি ও প্রকৃতি ধ্বংসকারী আগ্রাসন, সর্বোপরি সাম্রাজ্যবাদীদদের নতুন মেরুকরণ এবং তৃতীয় বিশ্বযদ্ধের বিপদ হাজির হয়েছে। যা বিশ্ব সর্বহারা শ্রেণির আন্তর্জাতিক কেন্দ্রের প্রয়োজনীয়তাকে অপরিহার্যতায় পরিণত করেছে। যা বিশ্বের নানান প্রান্তের মাওবাদীরা উপলব্ধি করছেন এবং জোরের সাথে এই উদ্যোগে সামিল হয়েছেন/হচ্ছেন।
এই মাওবাদী পার্টি/সংগঠনগুলো হচ্ছে–
কমিউনিস্ট ওয়ার্কার ইউনিয়ন (মালেমা), কলম্বিয়া
গ্যালিসিয়ার মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টির পুনর্গঠন কমিটি
মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টিÑ ইতালি
আফগানিস্তানের কমিউনিস্ট (মাওবাদী) পার্টি
ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী)
নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি (বলশেভিক)
ইরানের রেড রোড (মাওবাদী গ্রুপ)
নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী বিপ্লবী)
পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টি (পিবিএসপি/বাংলাদেশ)
সুইজারল্যান্ডের কমিউনিস্ট পার্টি (রেড ফ্যাকশন)
এছাড়াও তুরস্ক, ব্রাজিল, আমেরিকা, রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের মাওবাদী পার্টি/গ্রুপ এই কর্মসূচিতে এগিয়ে আসছেন বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
মাওবাদীদের একটি নতুন আন্তর্জাতিক সংগঠন গড়ার প্রক্রিয়া শুরু
অনলাইনের বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, বিশ্বের মাওবাদী বিপ্লবী পার্টি/সংগঠনগুলো নতুন করে পুনর্গঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে এবং একটি নতুন আন্তর্জাতিক কেন্দ্র গঠনের লক্ষ্যে প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তাদের বিভিন্ন উদ্যোগের একটি হলো— ১ মে ২০২৩ উপলক্ষ্যে পার্টি/সংগঠনগুলোর যৌথ বিবৃতি প্রদান। এর আগে ২৪ ফেব্রুয়ারি,’২৩ ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে একটি যুক্ত-বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো কতৃক বিশ্ব যুদ্ধের পাঁয়তারা রুখে দিতে দেশে দেশে বিপ্লবী সংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয় এ বিবৃতিতে। বিবৃতির মূল স্লোগান ছিল—
সাম্রাজ্যবাদী পুঁজিবাদ নিপাত যাক, সমাজতন্ত্র-কমিউনিজম জিন্দাবাদ!
বিপ্লব যুদ্ধকে বন্ধ করবে, নতুবা যুদ্ধ বিপ্লবকে ছড়িয়ে দেবে।
দুনিয়ার সর্বহারা ও জাতি-জনগণ, সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে এক হও!
রুশ-চীন মহাবিতর্কের মধ্য দিয়ে গত শতাব্দীর ৬০-এর দশক থেকে বিশ্বব্যাপী বিপ্লবী কমিউনিস্ট আন্দোলন পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। মাওয়ের নেতৃত্বে চীনে মহান সর্বহারা সাংস্কৃতিক বিপ্লবের প্রভাবে ভারতীয় উপমহাদেশে নকশালবাড়ি আন্দোলন সমাজ রূপান্তরের জন্য রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের বিপ্লবী তত্ত্ব মাওবাদ (তৎকালে মাও চিন্তাধারা) গ্রহণ করেছিলো। একই ভাবে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে/অ লেও এমনটা ঘটেছিলো। কিন্তু তখন একক কোনো আন্তর্জাতিক কেন্দ্র গড়ে উঠেনি। মাও-এর মৃত্যু, চীনে সংশোধনবাদীদের রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সংশোধনবাদী (পুঁজিবাদী) লাইন গ্রহণ, বিশ্বব্যাপী পুনরায় মতাদর্শগত মহাবিতর্ক– ইত্যাদি কারণে চতুর্থ আন্তর্জাতিক কেন্দ্র গঠনের উদ্যোগে বিলম্ব ঘটে।
তা সত্ত্বেও গত শতাব্দীর আশির দশকে চতুর্থ আন্তর্জাতিক এর প্রস্তুতি সংগঠন হিসেবে “বিপ্লবী আন্তর্জাতিকতাবাদী আন্দোলন” (রিম) গঠন ছিলো তাৎপর্যপূর্ণ। মাও-এর মৃত্যু পরবর্তীতে এই কেন্দ্র প্রায় চার দশক পর পুনরায় একটি কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিক গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। তারা তাত্ত্বিকভাবে মাওবাদ গ্রহণ করে, গণযুদ্ধের সর্বজনীনতা গ্রহণ করে এবং একটি আন্তর্জাতিক সাধারণ লাইন গড়ে তোলার পথে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি ঘটায়। রিম পেরু, নেপালের অগ্রসর গণযুদ্ধের অভিজ্ঞতাকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে গৌরবোজ্জল ভূমিকা রেখেছিলো।
দুঃখজনক হলো যে, রিমের অন্তর্ভুক্ত সংগঠনগুলোর মধ্যে বিভিন্ন লাইনগত গুরুতর মতপার্থক্য সৃষ্টি হয়। পেরু পার্টিতে গণযুদ্ধ বিরোধী তথাকথিত শান্তি লাইনের আবির্ভাব, নেপাল পার্টির প্রচন্ড-ভট্টরাই চক্রের বিশ্বাসঘাতকতা এবং আমেরিকান কমিউনিস্ট পার্টির বব এ্যাভাকিয়ানের “নয়া কমিউনিজম” তত্ত্ব রিমকে অকার্যকর করে ফেলে।
‘রিম’ অকার্যকর হয়ে যাবার পর থেকে বিশ্বের আন্তরিক মাওবাদীরা পুনরায় একত্রিত হওয়া এবং একটি ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম বা আন্তর্জাতিক গড়ে তোলার কঠোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। সমসাময়িককালে বিশ্বব্যাপী ফ্যাসিবাদের উত্থান, শ্রমিকশ্রেণি ও জনগণের উপর এক সর্বব্যাপী আক্রমণ, মানবজাতি ও প্রকৃতি ধ্বংসকারী আগ্রাসন, সর্বোপরি সাম্রাজ্যবাদীদদের নতুন মেরুকরণ এবং তৃতীয় বিশ্বযদ্ধের বিপদ হাজির হয়েছে। যা বিশ্ব সর্বহারা শ্রেণির আন্তর্জাতিক কেন্দ্রের প্রয়োজনীয়তাকে অপরিহার্যতায় পরিণত করেছে। যা বিশ্বের নানান প্রান্তের মাওবাদীরা উপলব্ধি করছেন এবং জোরের সাথে এই উদ্যোগে সামিল হয়েছেন/হচ্ছেন।
এই মাওবাদী পার্টি/সংগঠনগুলো হচ্ছে–
কমিউনিস্ট ওয়ার্কার ইউনিয়ন (মালেমা), কলম্বিয়া
গ্যালিসিয়ার মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টির পুনর্গঠন কমিটি
মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টিÑ ইতালি
আফগানিস্তানের কমিউনিস্ট (মাওবাদী) পার্টি
ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী)
নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি (বলশেভিক)
ইরানের রেড রোড (মাওবাদী গ্রুপ)
নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী বিপ্লবী)
পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টি (পিবিএসপি/বাংলাদেশ)
সুইজারল্যান্ডের কমিউনিস্ট পার্টি (রেড ফ্যাকশন)
এছাড়াও তুরস্ক, ব্রাজিল, আমেরিকা, রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের মাওবাদী পার্টি/গ্রুপ এই কর্মসূচিতে এগিয়ে আসছেন বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
আরও খবর
- শনি
- রোব
- সোম
- মঙ্গল
- বুধ
- বৃহ
- শুক্র