হামিদুল হকের মৃত্যুতে
বামপন্থি রাজনীতিক জনাব হামিদুল হক গত ২ জুলাই রাত ৯টায় মৃত্যুবরণ করেন। দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তিনি কয়েক বছর ধরে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি ঢাকায় বসবাস করতেন। তার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলায়।
তার রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে আলোচনা করতে গেলে তিনটি পর্যায়ের আলোচনা করতে হবে।
প্রথম পর্যায়ে তিনি ৬০-এর দশকে আওয়ামী ছাত্র রাজনীতিতে জাতীয়তাবাদী চেতনায় সক্রিয় ছিলেন এবং তাতে সংগ্রামী ভূমিকা রেখে তিনি জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। ’৭১-এ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ করেন।
তবে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার কিছু পর দেশে সর্বস্তরের জনগণের বিপ্লবী উত্থানকালে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে তিনি বিরোধী গ্রুপের সাথে যুক্ত হন এবং মাওবাদী বিপ্লবী রাজনীতি দ্বারা প্রভাবিত হতে থাকেন। এখান থেকে তার রাজনৈতিক জীবনের দ্বিতীয় পর্যায়ের শুরু। কিছু পরে তিনি তৎকালে দেশের অন্যতম প্রধান মাওবাদী পার্টি পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টিতে যোগ দিয়ে সার্বক্ষণিক কর্মী হিসেবে গ্রামা লে চলে যান। সর্বহারা পার্টি ও মাওবাদী কর্মী হিসেবে তার রাজনৈতিক জীবনই ছিল তার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক অধ্যায়। এতে তিনি গ্রেফতার হন, জেল পালিয়ে পুনরায় বিপ্লবী জীবন বেছে নেন। পুনরায় গ্রেফতার হন। তার পার্টিতে ’৭০-দশকে বহুধা বিভক্তি ঘটলে তিনি বিভ্রান্ত হন। জেল থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি আর মাওবাদী রাজনীতিতে সার্বক্ষণিক ভাবে সক্রিয় না থাকলেও কিছু পরে গণসংগঠনে কাজ করেন। তিনি কয়েক বছর “শহিদ বিপ্লবী ও দেশপ্রেমিক স্মৃতিসংসদ”-এর সভাপতি ছিলেন। পরে সংস্কারবাদী ধারার রাজনৈতিক চেতনার কারণে তার সাথে স্মৃতিসংসদের মত- পার্থক্য হয় এবং এ সংগঠন থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
তিনি মাওবাদে দৃঢ় থাকতে ব্যর্থ হন। এভাবে রাজনীতিতে তার তৃতীয় পর্যায়ের শুরু।
এ তৃতীয় পর্যায়ে তিনি সংস্কারবাদী রাজনৈতিক ধারায় গড়িয়ে পড়েন এবং কার্যত একটি সংশোধনবাদী লাইন গ্রহণ করেন। তিনি একটি জাতীয়তাবাদী সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট ধরনের পার্টি গড়ে তুলেন, যদিও একে তিনি এগিয়ে নিতে ব্যর্থ হন। তার এ পার্টি সংশোধনবাদীদের “বাম জোট”-এ যুক্ত হয়।
তবে বিমূর্তভাবে তিনি সমাজতন্ত্রের প্রতি আস্থাশীল ছিলেন। নিপীড়িত জনগণের মুক্তি সংগ্রামের প্রতি সহমর্মী ছিলেন। মাওবাদী রাজনীতির প্রতি তার একটা দুর্বলতাও শেষ জীবন পর্যন্ত বজায় ছিল।
হামিদুল হকের রাজনৈতিক জীবন থেকে ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দুটো শিক্ষাই নতুন প্রজন্মকে নিতে হবে। তার দুর্বলতাগুলোকে বুঝে তাকে সংগ্রাম করতে হবে এবং মাওবাদী মতাদর্শ ও বিপ্লবী রাজনীতিকে গ্রহণ করতে হবে।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
হামিদুল হকের মৃত্যুতে
বামপন্থি রাজনীতিক জনাব হামিদুল হক গত ২ জুলাই রাত ৯টায় মৃত্যুবরণ করেন। দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তিনি কয়েক বছর ধরে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি ঢাকায় বসবাস করতেন। তার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলায়।
তার রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে আলোচনা করতে গেলে তিনটি পর্যায়ের আলোচনা করতে হবে।
প্রথম পর্যায়ে তিনি ৬০-এর দশকে আওয়ামী ছাত্র রাজনীতিতে জাতীয়তাবাদী চেতনায় সক্রিয় ছিলেন এবং তাতে সংগ্রামী ভূমিকা রেখে তিনি জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। ’৭১-এ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ করেন।
তবে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার কিছু পর দেশে সর্বস্তরের জনগণের বিপ্লবী উত্থানকালে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে তিনি বিরোধী গ্রুপের সাথে যুক্ত হন এবং মাওবাদী বিপ্লবী রাজনীতি দ্বারা প্রভাবিত হতে থাকেন। এখান থেকে তার রাজনৈতিক জীবনের দ্বিতীয় পর্যায়ের শুরু। কিছু পরে তিনি তৎকালে দেশের অন্যতম প্রধান মাওবাদী পার্টি পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টিতে যোগ দিয়ে সার্বক্ষণিক কর্মী হিসেবে গ্রামা লে চলে যান। সর্বহারা পার্টি ও মাওবাদী কর্মী হিসেবে তার রাজনৈতিক জীবনই ছিল তার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক অধ্যায়। এতে তিনি গ্রেফতার হন, জেল পালিয়ে পুনরায় বিপ্লবী জীবন বেছে নেন। পুনরায় গ্রেফতার হন। তার পার্টিতে ’৭০-দশকে বহুধা বিভক্তি ঘটলে তিনি বিভ্রান্ত হন। জেল থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি আর মাওবাদী রাজনীতিতে সার্বক্ষণিক ভাবে সক্রিয় না থাকলেও কিছু পরে গণসংগঠনে কাজ করেন। তিনি কয়েক বছর “শহিদ বিপ্লবী ও দেশপ্রেমিক স্মৃতিসংসদ”-এর সভাপতি ছিলেন। পরে সংস্কারবাদী ধারার রাজনৈতিক চেতনার কারণে তার সাথে স্মৃতিসংসদের মত- পার্থক্য হয় এবং এ সংগঠন থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
তিনি মাওবাদে দৃঢ় থাকতে ব্যর্থ হন। এভাবে রাজনীতিতে তার তৃতীয় পর্যায়ের শুরু।
এ তৃতীয় পর্যায়ে তিনি সংস্কারবাদী রাজনৈতিক ধারায় গড়িয়ে পড়েন এবং কার্যত একটি সংশোধনবাদী লাইন গ্রহণ করেন। তিনি একটি জাতীয়তাবাদী সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট ধরনের পার্টি গড়ে তুলেন, যদিও একে তিনি এগিয়ে নিতে ব্যর্থ হন। তার এ পার্টি সংশোধনবাদীদের “বাম জোট”-এ যুক্ত হয়।
তবে বিমূর্তভাবে তিনি সমাজতন্ত্রের প্রতি আস্থাশীল ছিলেন। নিপীড়িত জনগণের মুক্তি সংগ্রামের প্রতি সহমর্মী ছিলেন। মাওবাদী রাজনীতির প্রতি তার একটা দুর্বলতাও শেষ জীবন পর্যন্ত বজায় ছিল।
হামিদুল হকের রাজনৈতিক জীবন থেকে ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দুটো শিক্ষাই নতুন প্রজন্মকে নিতে হবে। তার দুর্বলতাগুলোকে বুঝে তাকে সংগ্রাম করতে হবে এবং মাওবাদী মতাদর্শ ও বিপ্লবী রাজনীতিকে গ্রহণ করতে হবে।
আরও খবর
- শনি
- রোব
- সোম
- মঙ্গল
- বুধ
- বৃহ
- শুক্র