সাম্রাজ্যবাদী বিশ্ব ব্যবস্থায় স্বাস্থ্যব্যবস্থার মৌলিক রূপান্তর সম্ভব নয় প্রয়োজন সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে নয়াগণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা
আন্দোলন প্রতিবেদন
রবিবার, ২৯ নভেম্বর ২০২০ | অনলাইন সংস্করণ
কোভিড-১৯ মহামারী বিশ্বব্যাপী এক মহাসংকটের সৃষ্টি করেছে। যা অর্থনীতির সাথে স্বাস্থ্যখাতের গণবিরোধী চরিত্র ও অব্যবস্থাপনার প্রকটতাকে তুলে ধরেছে। করোনা পরিস্থিতিতে অনেকে বলছেন পৃথিবীতে এ সবের একটি পরিবর্তন প্রয়োজন হবে। কেউ কেউ পুঁজিবাদ-সাম্রাজ্যবাদকেওএর জন্য দায়ী করছেন। পৃথিবীর পরিবর্তন, রূপান্তরের বিষয় বলা হলেও তা থাকছে বিমূর্ত। যারা মূর্ত প্রস্তাব করছেন তারা সংস্কারের কথা বলছেন। আজকে করোনার বৈশ্বিক আক্রমণের মুখে জনগণের দুর্ভোগ হ্রাসের জন্য প্রথম প্রয়োজন ছিল গণমুখী রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সাথে একটি গণমুখী স্বাস্থ্যব্যবস্থা। স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ হচ্ছে। গণবিরোধী স্বাস্থ্যব্যবস্থায় জনগণের চরম দুর্ভোগ নিয়েও বাণিজ্য ও দুর্নীতি চলছে। করোনা দুর্যোগকালে গণবিরোধী স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বাতিল এবং গণমুখী স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষে নিম্নোক্ত কিছু দাবি আমরা তুলে ধরছি-
১। ব্যক্তিমালিকানার মুনাফাভিত্তিক গণবিরোধী, দুর্নীতিবাজ চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য-ব্যবস্থা বাতিল করতে হবে!
২। সমগ্র চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য-ব্যবস্থাকে জাতীয়করণ করতে হবে!
- ঔষধ ও স্বাস্থ্যসামগ্রী উৎপাদনকে জাতীয়করণ করতে হবে!
- করোনা ভ্যাকসিন ও স্বাস্থ্য সামগ্রী নিয়ে বাণিজ্য সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে!
- সাম্রাজ্যবাদ-সম্প্রসারণবাদ ও মুৎসুদ্দি বুর্জোয়াদের স্বার্থে বৈদেশিক বাণিজ্য সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে!
৩। ডাক্তারদের প্রাইভেট চেম্বার খোলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে।
- অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে তাদের প্র্যাকটিসের সময় ও জনগণের সাধ্যের মধ্যে ফি নির্ধারণ করে দিতে হবে!
- ডাক্তারদের বিশ্রাম, চিন্তা, গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত সময় ব্যয় করার দিকনির্দেশনা থাকতে হবে!
- ডাক্তারদের চাকরি নিয়ে বিদেশে যাওয়া নিষিদ্ধ করতে হবে!
৪। বিনা ফিতে করোনা পরীক্ষা করতে হবে!
- প্রতিটি মানুষকে করোনা পরীক্ষার আওতায় আনতে হবে। সে করোনায় আক্রান্ত হোক বা না হোক!
- প্রতিটি মানুষের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখতে হবে, সে রোগী হোক বা না হোক।
৫। নাগরিকদের পরীক্ষা, চিকিৎসা ও ঔষধ- এই সব খরচ সরকারি অর্থে ব্যয় করতে হবে!
৬। চিকিৎসা ব্যবস্থা শহর-নগরকেন্দ্রীক ও মধ্যবিত্ত-উচ্চবিত্ত কেন্দ্রীক সীমাবদ্ধ রাখা চলবে না!
- চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রাম কেন্দ্রীক করতে হবে!
৭। প্রতি ইউনিয়নভিত্তিক হাসপাতাল নির্মাণ, ডাক্তার নিয়োগ, প্রতি ডাক্তার পিছু ৩ জন নার্স ও টেকনিশিয়ান নিয়োগ দিতে হবে। এজন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ নার্সিং ও টেকনিশিয়ান কলেজ স্থাপন ও ট্রেনিং-এর ব্যবস্থা করতে হবে!
৮। শহরে করোনা বা যেকোনো মহামারীর চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপনে বস্তি বা বস্তিসম বাসস্থানগুলোকে প্রাধান্য দিতে হবে!
৯। সাম্রাজ্যবাদ ও ভারতের উপর নির্ভর না করে দেশের গবেষণাকে ভিত্তি করতে হবে। সা¤্র্রাজ্যবাদ-সম্প্রসারণবাদের মুনাফা ও টাকা বানানোর গবেষণাকে বর্জন করতে হবে!
১০। দেশজ প্রাচীন চিকিৎসা ও হোমিওপ্যাথির গবেষণা বাড়িয়ে আধুনিক চিকিৎসার সাথে সমন্বিত করতে হবে!
১১। বাজেটে স্বাস্থ্যখাতকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। বাজেটে অন্তত ১০ থেকে ২০% বরাদ্দ দিতে হবে!
১২। আমলা, ব্যবসায়ী, দলবাজ ডাক্তার, দলবাজ শ্রমিকনেতা নামের বুর্জোয়া, আওয়ামী মাস্তান ও দুর্নীতিবাজদের উপর স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে ছেড়ে দেয়া চলবে না!
১৩। মহামারীর মত জাতীয় দুর্যোগে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য তরুণ সমাজকে উদ্বুদ্ধ, সংগঠিত ও স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতে হবে!
১৪। গুটিকয়েক দুর্নীতিবাজ দমন করে সমগ্র স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি ব্যবস্থাকে আড়াল করার আইওয়াস চলবে না! সকল দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত ও শাস্তি দিতে হবে! বিদ্যমান দুর্নীতিপরায়ন স্বাস্থ্য-ব্যবস্থার উন্মোচন ও স্বীকৃতি দিতে হবে!
১৫। সেনাবাহিনীর মত সুশৃংখল, কষ্টসহিষ্ণু ও প্রযুক্তিসমৃদ্ধ সরকারি সংস্থাকে মহামারীর মত কাজে ব্যাপকভাবে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সেবা করার জন্য নিয়োগ দিতে হবে!
১৬। জনগণকে আধুনিক বৈজ্ঞানিক চেতনায় সজ্জিত করা, সমস্ত ধরনের কবিরাজি, পানিপড়াসহ অপচিকিৎসাকে নিষিদ্ধ করা, মহামারী বিষয়ে অবৈজ্ঞানিক প্রচারকে কঠেরভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে!
১৭। মহামারীকালে ধর্মপালনের নামে মসজিদ-মন্দির-গির্জা-মাদ্রাসা-জানাজা-তাবলিগ-ধর্মীয় সমাবেশকে অবাধে চলতে দেয়া প্রতিরোধ করতে হবে!
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাম্রাজ্যবাদী বিশ্ব ব্যবস্থায় স্বাস্থ্যব্যবস্থার মৌলিক রূপান্তর সম্ভব নয় প্রয়োজন সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে নয়াগণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা
কোভিড-১৯ মহামারী বিশ্বব্যাপী এক মহাসংকটের সৃষ্টি করেছে। যা অর্থনীতির সাথে স্বাস্থ্যখাতের গণবিরোধী চরিত্র ও অব্যবস্থাপনার প্রকটতাকে তুলে ধরেছে। করোনা পরিস্থিতিতে অনেকে বলছেন পৃথিবীতে এ সবের একটি পরিবর্তন প্রয়োজন হবে। কেউ কেউ পুঁজিবাদ-সাম্রাজ্যবাদকেওএর জন্য দায়ী করছেন। পৃথিবীর পরিবর্তন, রূপান্তরের বিষয় বলা হলেও তা থাকছে বিমূর্ত। যারা মূর্ত প্রস্তাব করছেন তারা সংস্কারের কথা বলছেন। আজকে করোনার বৈশ্বিক আক্রমণের মুখে জনগণের দুর্ভোগ হ্রাসের জন্য প্রথম প্রয়োজন ছিল গণমুখী রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সাথে একটি গণমুখী স্বাস্থ্যব্যবস্থা। স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ হচ্ছে। গণবিরোধী স্বাস্থ্যব্যবস্থায় জনগণের চরম দুর্ভোগ নিয়েও বাণিজ্য ও দুর্নীতি চলছে। করোনা দুর্যোগকালে গণবিরোধী স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বাতিল এবং গণমুখী স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষে নিম্নোক্ত কিছু দাবি আমরা তুলে ধরছি-
১। ব্যক্তিমালিকানার মুনাফাভিত্তিক গণবিরোধী, দুর্নীতিবাজ চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য-ব্যবস্থা বাতিল করতে হবে!
২। সমগ্র চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য-ব্যবস্থাকে জাতীয়করণ করতে হবে!
- ঔষধ ও স্বাস্থ্যসামগ্রী উৎপাদনকে জাতীয়করণ করতে হবে!
- করোনা ভ্যাকসিন ও স্বাস্থ্য সামগ্রী নিয়ে বাণিজ্য সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে!
- সাম্রাজ্যবাদ-সম্প্রসারণবাদ ও মুৎসুদ্দি বুর্জোয়াদের স্বার্থে বৈদেশিক বাণিজ্য সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে!
৩। ডাক্তারদের প্রাইভেট চেম্বার খোলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে।
- অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে তাদের প্র্যাকটিসের সময় ও জনগণের সাধ্যের মধ্যে ফি নির্ধারণ করে দিতে হবে!
- ডাক্তারদের বিশ্রাম, চিন্তা, গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত সময় ব্যয় করার দিকনির্দেশনা থাকতে হবে!
- ডাক্তারদের চাকরি নিয়ে বিদেশে যাওয়া নিষিদ্ধ করতে হবে!
৪। বিনা ফিতে করোনা পরীক্ষা করতে হবে!
- প্রতিটি মানুষকে করোনা পরীক্ষার আওতায় আনতে হবে। সে করোনায় আক্রান্ত হোক বা না হোক!
- প্রতিটি মানুষের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখতে হবে, সে রোগী হোক বা না হোক।
৫। নাগরিকদের পরীক্ষা, চিকিৎসা ও ঔষধ- এই সব খরচ সরকারি অর্থে ব্যয় করতে হবে!
৬। চিকিৎসা ব্যবস্থা শহর-নগরকেন্দ্রীক ও মধ্যবিত্ত-উচ্চবিত্ত কেন্দ্রীক সীমাবদ্ধ রাখা চলবে না!
- চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রাম কেন্দ্রীক করতে হবে!
৭। প্রতি ইউনিয়নভিত্তিক হাসপাতাল নির্মাণ, ডাক্তার নিয়োগ, প্রতি ডাক্তার পিছু ৩ জন নার্স ও টেকনিশিয়ান নিয়োগ দিতে হবে। এজন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ নার্সিং ও টেকনিশিয়ান কলেজ স্থাপন ও ট্রেনিং-এর ব্যবস্থা করতে হবে!
৮। শহরে করোনা বা যেকোনো মহামারীর চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপনে বস্তি বা বস্তিসম বাসস্থানগুলোকে প্রাধান্য দিতে হবে!
৯। সাম্রাজ্যবাদ ও ভারতের উপর নির্ভর না করে দেশের গবেষণাকে ভিত্তি করতে হবে। সা¤্র্রাজ্যবাদ-সম্প্রসারণবাদের মুনাফা ও টাকা বানানোর গবেষণাকে বর্জন করতে হবে!
১০। দেশজ প্রাচীন চিকিৎসা ও হোমিওপ্যাথির গবেষণা বাড়িয়ে আধুনিক চিকিৎসার সাথে সমন্বিত করতে হবে!
১১। বাজেটে স্বাস্থ্যখাতকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। বাজেটে অন্তত ১০ থেকে ২০% বরাদ্দ দিতে হবে!
১২। আমলা, ব্যবসায়ী, দলবাজ ডাক্তার, দলবাজ শ্রমিকনেতা নামের বুর্জোয়া, আওয়ামী মাস্তান ও দুর্নীতিবাজদের উপর স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে ছেড়ে দেয়া চলবে না!
১৩। মহামারীর মত জাতীয় দুর্যোগে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য তরুণ সমাজকে উদ্বুদ্ধ, সংগঠিত ও স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতে হবে!
১৪। গুটিকয়েক দুর্নীতিবাজ দমন করে সমগ্র স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি ব্যবস্থাকে আড়াল করার আইওয়াস চলবে না! সকল দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত ও শাস্তি দিতে হবে! বিদ্যমান দুর্নীতিপরায়ন স্বাস্থ্য-ব্যবস্থার উন্মোচন ও স্বীকৃতি দিতে হবে!
১৫। সেনাবাহিনীর মত সুশৃংখল, কষ্টসহিষ্ণু ও প্রযুক্তিসমৃদ্ধ সরকারি সংস্থাকে মহামারীর মত কাজে ব্যাপকভাবে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সেবা করার জন্য নিয়োগ দিতে হবে!
১৬। জনগণকে আধুনিক বৈজ্ঞানিক চেতনায় সজ্জিত করা, সমস্ত ধরনের কবিরাজি, পানিপড়াসহ অপচিকিৎসাকে নিষিদ্ধ করা, মহামারী বিষয়ে অবৈজ্ঞানিক প্রচারকে কঠেরভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে!
১৭। মহামারীকালে ধর্মপালনের নামে মসজিদ-মন্দির-গির্জা-মাদ্রাসা-জানাজা-তাবলিগ-ধর্মীয় সমাবেশকে অবাধে চলতে দেয়া প্রতিরোধ করতে হবে!
আরও খবর
- শনি
- রোব
- সোম
- মঙ্গল
- বুধ
- বৃহ
- শুক্র