মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর ফ্যাসিবাদী আক্রমণ

আন্দোলন প্রতিবেদন
শুক্রবার, ১২ মে ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
আদর্শ প্রকাশনীর তিনটি বই এবারের একুশে বই মেলাতে বিক্রি নিষিদ্ধ করেছিল বাংলা একাডেমি। প্রথমে আদর্শ প্রকাশনীকেই বই মেলায় নিষিদ্ধ করেছিল। পরে আলোচ্য তিনটি বই মেলায় বিক্রি না করার শর্তে তাদের বইমেলায় অংশগ্রহণ করতে দেয়া হয়। বাংলা একাডেমি কলকাতায় বইমেলার আয়োজকদেরও বই তিনটির বিক্রি নিষিদ্ধ করার জন্য চিঠি দিয়েছিল। বই তিনটি হলো : ১) উন্নয়ন বিভ্রম– লেখক জিয়া হাসান; ২) অপ্রতিরোধ্য উন্নয়নের অভাবনীয় কথামালা– লেখক ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব; এবং ৩) বাঙালির মিডিয়োক্রিটির সন্ধানে– লেখক ফাহাম আব্দুস সালাম।
কী লেখা আছে বইগুলোতে?
বইগুলো সম্পর্কে স্বল্প পরিসরে গভীর মূল্যায়নে পৌঁছা মুশকিল। তাই, সংক্ষেপে কিছু মন্তব্য তুলে ধরা হলো–
বই তিনটিতে মুলত আওয়ামী ফ্যাসিাবাদী রাজনীতি, তাদের ‘উন্নয়ন’ অর্থনীতির ভন্ডামিকে তুলে ধরা হয়েছে। এই লেখকগণ ছিলেন নিয়মিত/অনিয়মিত কলাম লেখক। লেখকদের লেখাগুলো একত্রে ২০২২ সালে ছাপিয়ে প্রকাশ করেছে আদর্শ প্রকাশনী।
উন্নয়ন বিভ্রম বইটি ২০১২-২০১৪ সালের আর্থিক মন্দার উপর লেখা। শেয়ার মার্কেট, এমএলএম-এর মাধ্যমে জনগণের টাকা গায়েব করে দেয়া, অসংখ্য জনগণের আর্থিক ধ্বসের মধ্য থেকে ২০১৪ সালের আওয়ামী লীগের সাথে রাজনৈতিক বন্দোবস্তের মাধ্যমে দেশে নব্য ধনীক শ্রেণির আবির্ভাব। ক্ষমতাসীন দলের সাথে তাদের পারস্পরিক সহাবস্থান সম্পর্ক ব্যাখ্যা করেছেন লেখক। সবশেষে লেখক দেখিয়েছেন বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও বিবিধ সুবিধাপ্রাপ্ত অল্পকিছু পরিবারকেন্দ্রিক কিছু সুবিধাভোগী লোকদের হাতে বাংলাদেশের আগামী দশকের উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের যে প্রত্যাশা সৃষ্টি করা হয়েছে সেই পরিকল্পনা অত্যন্ত ভঙ্গুর ও উন্নয়ন অর্থনীতির মৌলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক। লেখকের মতে এই ভঙ্গুরতাগুলো অর্থনীতিকে একটি অনিবার্য সংকটের দিকে নিয়ে যাবে।
বাঙালির মিডিয়োক্রিটির সন্ধানে বইটি আওয়ামী রাজনীতির ফ্যাসিবাদকে উন্মোচন করেছে। যেমন বাঙালির বিপ্লব লেখার শেষে এক জায়গায় লেখক লিখেছেন– “পরম সহিষ্ণুতার কথা বললে আমি কেবল একটি উদাহরণই দেব– ৭ই মার্চ শেখ মুজিবর রহমান ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ বলে বাড়ি ফিরতে পেরেছিলেন– বাড়ীতে স্ত্রী-সন্তানের সাথে ডিনার করতে পেরেছিলেন। আজকে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় কোনো নেতা কাছাকাছি কোনো আহবান করলে তাকে রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগে জেলে ঢোকানো হবে পল্টন ময়দান থেকেই”। অন্য একটি লেখায় তথাকথিত নাস্তিক ব্লগারদের সমালোচনা করেছেন ধার্মিকদের প্রধান শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য। যুক্তি দিয়ে তিনি বোঝানোর চেষ্টা করেছেন ধার্মিকরা যতগুলো হত্যা করেছে, পুলিশ, রাষ্ট্র কিংবা আওয়ামী লীগ সরকার তার চেয়ে অনেক গুণ বেশি হত্যা করেছে। সে হিসেবে রাষ্ট্র ও আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় শত্রু।
এছাড়াও তিনি বলেছেন, দাড়ি-টুপিওয়ালা মুসলিমরা যাদের নাস্তিকরা শত্রু মনে করেন তাদের গালি না দিয়ে বিজ্ঞান বুঝালে তারা হয়তো মনোযোগ দিয়ে ওগুলো শুনতো এবং তাদের পরিবর্তন আসতো। রাজনৈতিকভাবে ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রের বিরোধিতা করলে দাড়ি-টুপিওয়ালারাই তাদের পক্ষে যেতো। উদাহরণ হিসেবে তিনি দেখান, লেখকের পরিচিত অনেক দাড়ি-টুপিওয়ালারাই প্রতিষ্ঠানবিরোধী লেখক খ্রিষ্টান নোয়ান চমস্কিকে পছন্দ করেন। একইসাথে তিনি এটাও লিখেছেন, ৬০-৯০'র দশকের শুরুর পূর্ব পর্যন্ত সমাজতান্ত্রিক ভাবাদর্শের প্রভাবে ইসালামাইজেশন কম হয়েছে। পরে সমাজতন্ত্রের পতনের মধ্য দিয়ে মেধাবী তরুণরা বামপন্থি আদর্শ কম ধারণ করছে। অনেক মেধাবী তরুণ তাদের রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করেন পলিটিক্যাল ইসলামকে ধারণের মধ্য দিয়ে। এছাড়াও রাষ্ট্রের দর্শনের সাথে ইসলামের দর্শনের মৌলিক দ্বন্দ্বের কথাও উল্লেখ করেন।
অপ্রতিরোধ্য উন্নয়নের অভাবনীয় কথামালা বইয়ে লেখক আওয়ামী সরকারের উন্নয়নের গলাবাজির উন্মোচন করে বলেছেন, সরকারের মদদপুষ্ট ধনীরা অতিধনী হচ্ছে; কিন্তু দরিদ্র জনগোষ্ঠী আরও গরিব হচ্ছে। অবকাঠামো উন্নয়নের আড়ালে ব্যাপক লুটপাটের চিত্র তুলে ধরেছেন। শর্টকাটে বড়লোক হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে এমএলএম বিজনেসের মুখোশ উন্মোচন করেছেন। নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় না করায় সরকারের সমালোচনা করেছেন। এবং রাষ্ট্র সংস্কারের প্রস্তাবনা ও রূপরেখা তুলে ধরেছেন। যা বিএনপি’র কর্মসূচির সাথে মিলে।
বই তিনটিতে আওয়ামী সরকারের ২০১৪ সালের ভোটারবিহীন নির্বাচন এবং ২০১৮ সালের ভোট ডাকাতির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসার মন্তব্য পরিষ্কারভাবে রয়েছে। অর্থাৎ দেশের প্রধান সমস্যা আওয়ামী লীগ– এমন ধারণা ব্যক্ত হয়েছে।
আওয়ামী ফ্যাসিবাদের সমালোচনা থাকায় বাংলা একাডেমি বই তিনটি নিষিদ্ধ করে প্রকাশ্যে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দালালীর ভূমিকা নিয়েছে।
মত প্রকাশের স্বাধীনতাহীনতার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে রবীন্দ্রনাথের হাতে গীতাঞ্জলি ও মুখে কাপড় বেঁধে একটি ভাষ্কর্য নির্মাণ করা হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রাতের অন্ধকারে লুকিয়ে এই ভাষ্কর্য গায়েব করে দেয়। (ধর্মবাদীদের মতো!) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখানে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের কর্মসূচিই বাস্তবায়ন করেছে। পরে রবীন্দ্রনাথের ভাস্কর্যটির মাথার অংশ ময়লা ফেলার জঞ্জালে পাওয়া যায়। এরা রবীন্দ্রনাথের বহু স্তুতি গায়, অথচ এরাই তাকে চোরের মতো লুকিয়ে রাতের অন্ধকারে ময়লার গাদায় নিক্ষেপ করেছে। কতটা ফ্যাসিস্ট হয়েছে এরা! রবীন্দ্রনাথের মূল্যায়ন নিয়ে বহু মত ও পার্থক্য রয়েছে প্রগতিশীল মানুষদের মাঝে। কিন্তু আওয়ামী সরকারি ইঙ্গিতে এই অপকর্ম যে মতপ্রকাশের অধিকারহীনতার বিরুদ্ধে সাধারণ প্রতিবাদকেও সহ্য করতে রাজী নয়, সেটা পুনরায় প্রমাণ করলো। কিন্তু রবীন্দ্র-প্রেমিক নামে পরিচিত আওয়ামী ঘরানার বুদ্ধিজীবী গোষ্ঠীর মুখ থেকে কোনো রা-শব্দ বেরুলো না!
বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিজেদের বশংবদ লোক নিয়োগ করে ফ্যাসিবাদী সরকার রাষ্ট্রসহ সমগ্র প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোগুলোকে ফ্যাসিকরণ করেছে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ক্যান্সারের মতো সমগ্র জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে। ফ্যাসিবাদ অবসানে আন্দোলনকে জোরদার করতে হবে।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর ফ্যাসিবাদী আক্রমণ
আদর্শ প্রকাশনীর তিনটি বই এবারের একুশে বই মেলাতে বিক্রি নিষিদ্ধ করেছিল বাংলা একাডেমি। প্রথমে আদর্শ প্রকাশনীকেই বই মেলায় নিষিদ্ধ করেছিল। পরে আলোচ্য তিনটি বই মেলায় বিক্রি না করার শর্তে তাদের বইমেলায় অংশগ্রহণ করতে দেয়া হয়। বাংলা একাডেমি কলকাতায় বইমেলার আয়োজকদেরও বই তিনটির বিক্রি নিষিদ্ধ করার জন্য চিঠি দিয়েছিল। বই তিনটি হলো : ১) উন্নয়ন বিভ্রম– লেখক জিয়া হাসান; ২) অপ্রতিরোধ্য উন্নয়নের অভাবনীয় কথামালা– লেখক ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব; এবং ৩) বাঙালির মিডিয়োক্রিটির সন্ধানে– লেখক ফাহাম আব্দুস সালাম।
কী লেখা আছে বইগুলোতে?
বইগুলো সম্পর্কে স্বল্প পরিসরে গভীর মূল্যায়নে পৌঁছা মুশকিল। তাই, সংক্ষেপে কিছু মন্তব্য তুলে ধরা হলো–
বই তিনটিতে মুলত আওয়ামী ফ্যাসিাবাদী রাজনীতি, তাদের ‘উন্নয়ন’ অর্থনীতির ভন্ডামিকে তুলে ধরা হয়েছে। এই লেখকগণ ছিলেন নিয়মিত/অনিয়মিত কলাম লেখক। লেখকদের লেখাগুলো একত্রে ২০২২ সালে ছাপিয়ে প্রকাশ করেছে আদর্শ প্রকাশনী।
উন্নয়ন বিভ্রম বইটি ২০১২-২০১৪ সালের আর্থিক মন্দার উপর লেখা। শেয়ার মার্কেট, এমএলএম-এর মাধ্যমে জনগণের টাকা গায়েব করে দেয়া, অসংখ্য জনগণের আর্থিক ধ্বসের মধ্য থেকে ২০১৪ সালের আওয়ামী লীগের সাথে রাজনৈতিক বন্দোবস্তের মাধ্যমে দেশে নব্য ধনীক শ্রেণির আবির্ভাব। ক্ষমতাসীন দলের সাথে তাদের পারস্পরিক সহাবস্থান সম্পর্ক ব্যাখ্যা করেছেন লেখক। সবশেষে লেখক দেখিয়েছেন বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও বিবিধ সুবিধাপ্রাপ্ত অল্পকিছু পরিবারকেন্দ্রিক কিছু সুবিধাভোগী লোকদের হাতে বাংলাদেশের আগামী দশকের উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের যে প্রত্যাশা সৃষ্টি করা হয়েছে সেই পরিকল্পনা অত্যন্ত ভঙ্গুর ও উন্নয়ন অর্থনীতির মৌলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক। লেখকের মতে এই ভঙ্গুরতাগুলো অর্থনীতিকে একটি অনিবার্য সংকটের দিকে নিয়ে যাবে।
বাঙালির মিডিয়োক্রিটির সন্ধানে বইটি আওয়ামী রাজনীতির ফ্যাসিবাদকে উন্মোচন করেছে। যেমন বাঙালির বিপ্লব লেখার শেষে এক জায়গায় লেখক লিখেছেন– “পরম সহিষ্ণুতার কথা বললে আমি কেবল একটি উদাহরণই দেব– ৭ই মার্চ শেখ মুজিবর রহমান ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ বলে বাড়ি ফিরতে পেরেছিলেন– বাড়ীতে স্ত্রী-সন্তানের সাথে ডিনার করতে পেরেছিলেন। আজকে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় কোনো নেতা কাছাকাছি কোনো আহবান করলে তাকে রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগে জেলে ঢোকানো হবে পল্টন ময়দান থেকেই”। অন্য একটি লেখায় তথাকথিত নাস্তিক ব্লগারদের সমালোচনা করেছেন ধার্মিকদের প্রধান শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য। যুক্তি দিয়ে তিনি বোঝানোর চেষ্টা করেছেন ধার্মিকরা যতগুলো হত্যা করেছে, পুলিশ, রাষ্ট্র কিংবা আওয়ামী লীগ সরকার তার চেয়ে অনেক গুণ বেশি হত্যা করেছে। সে হিসেবে রাষ্ট্র ও আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় শত্রু।
এছাড়াও তিনি বলেছেন, দাড়ি-টুপিওয়ালা মুসলিমরা যাদের নাস্তিকরা শত্রু মনে করেন তাদের গালি না দিয়ে বিজ্ঞান বুঝালে তারা হয়তো মনোযোগ দিয়ে ওগুলো শুনতো এবং তাদের পরিবর্তন আসতো। রাজনৈতিকভাবে ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রের বিরোধিতা করলে দাড়ি-টুপিওয়ালারাই তাদের পক্ষে যেতো। উদাহরণ হিসেবে তিনি দেখান, লেখকের পরিচিত অনেক দাড়ি-টুপিওয়ালারাই প্রতিষ্ঠানবিরোধী লেখক খ্রিষ্টান নোয়ান চমস্কিকে পছন্দ করেন। একইসাথে তিনি এটাও লিখেছেন, ৬০-৯০'র দশকের শুরুর পূর্ব পর্যন্ত সমাজতান্ত্রিক ভাবাদর্শের প্রভাবে ইসালামাইজেশন কম হয়েছে। পরে সমাজতন্ত্রের পতনের মধ্য দিয়ে মেধাবী তরুণরা বামপন্থি আদর্শ কম ধারণ করছে। অনেক মেধাবী তরুণ তাদের রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করেন পলিটিক্যাল ইসলামকে ধারণের মধ্য দিয়ে। এছাড়াও রাষ্ট্রের দর্শনের সাথে ইসলামের দর্শনের মৌলিক দ্বন্দ্বের কথাও উল্লেখ করেন।
অপ্রতিরোধ্য উন্নয়নের অভাবনীয় কথামালা বইয়ে লেখক আওয়ামী সরকারের উন্নয়নের গলাবাজির উন্মোচন করে বলেছেন, সরকারের মদদপুষ্ট ধনীরা অতিধনী হচ্ছে; কিন্তু দরিদ্র জনগোষ্ঠী আরও গরিব হচ্ছে। অবকাঠামো উন্নয়নের আড়ালে ব্যাপক লুটপাটের চিত্র তুলে ধরেছেন। শর্টকাটে বড়লোক হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে এমএলএম বিজনেসের মুখোশ উন্মোচন করেছেন। নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় না করায় সরকারের সমালোচনা করেছেন। এবং রাষ্ট্র সংস্কারের প্রস্তাবনা ও রূপরেখা তুলে ধরেছেন। যা বিএনপি’র কর্মসূচির সাথে মিলে।
বই তিনটিতে আওয়ামী সরকারের ২০১৪ সালের ভোটারবিহীন নির্বাচন এবং ২০১৮ সালের ভোট ডাকাতির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসার মন্তব্য পরিষ্কারভাবে রয়েছে। অর্থাৎ দেশের প্রধান সমস্যা আওয়ামী লীগ– এমন ধারণা ব্যক্ত হয়েছে।
আওয়ামী ফ্যাসিবাদের সমালোচনা থাকায় বাংলা একাডেমি বই তিনটি নিষিদ্ধ করে প্রকাশ্যে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দালালীর ভূমিকা নিয়েছে।
মত প্রকাশের স্বাধীনতাহীনতার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে রবীন্দ্রনাথের হাতে গীতাঞ্জলি ও মুখে কাপড় বেঁধে একটি ভাষ্কর্য নির্মাণ করা হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রাতের অন্ধকারে লুকিয়ে এই ভাষ্কর্য গায়েব করে দেয়। (ধর্মবাদীদের মতো!) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখানে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের কর্মসূচিই বাস্তবায়ন করেছে। পরে রবীন্দ্রনাথের ভাস্কর্যটির মাথার অংশ ময়লা ফেলার জঞ্জালে পাওয়া যায়। এরা রবীন্দ্রনাথের বহু স্তুতি গায়, অথচ এরাই তাকে চোরের মতো লুকিয়ে রাতের অন্ধকারে ময়লার গাদায় নিক্ষেপ করেছে। কতটা ফ্যাসিস্ট হয়েছে এরা! রবীন্দ্রনাথের মূল্যায়ন নিয়ে বহু মত ও পার্থক্য রয়েছে প্রগতিশীল মানুষদের মাঝে। কিন্তু আওয়ামী সরকারি ইঙ্গিতে এই অপকর্ম যে মতপ্রকাশের অধিকারহীনতার বিরুদ্ধে সাধারণ প্রতিবাদকেও সহ্য করতে রাজী নয়, সেটা পুনরায় প্রমাণ করলো। কিন্তু রবীন্দ্র-প্রেমিক নামে পরিচিত আওয়ামী ঘরানার বুদ্ধিজীবী গোষ্ঠীর মুখ থেকে কোনো রা-শব্দ বেরুলো না!
বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিজেদের বশংবদ লোক নিয়োগ করে ফ্যাসিবাদী সরকার রাষ্ট্রসহ সমগ্র প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোগুলোকে ফ্যাসিকরণ করেছে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ক্যান্সারের মতো সমগ্র জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে। ফ্যাসিবাদ অবসানে আন্দোলনকে জোরদার করতে হবে।
আরও খবর
- শনি
- রোব
- সোম
- মঙ্গল
- বুধ
- বৃহ
- শুক্র