শপথের নামে শিক্ষার্থীদের মগজ ধোলাই-এর আওয়ামী ফ্যাসিবাদী কর্মসূচি

আন্দোলন প্রতিবেদন
শনিবার, ২ এপ্রিল ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
গত ১৬ ডিসেম্বর ২০২১-এ শেখ হাসিনা এর সূচনা করেন। সারা দেশের জনগণকে দিয়ে এ শপথ পাঠ করানোর চেষ্টা করলেও খুব কম মানুষই তাতে অংশ নেন। এর পর সরকার নির্দেশ জারি করেছে, সকল বিদ্যালয়ে প্রতিদিনের কর্মসূচি শুরুর আগে যে শপথ পাঠ করানো হয় তাতে সরকার নির্ধারিত বক্তব্যটি পড়াতে হবে। কোমলমতি শিশুদেরকে আওয়ামী রাজনীতি ও তার মিথ্যা ইতিহাস দ্বারা মগজ ধোলাই করার এক ফ্যাসিবাদী কর্মসূচি হলো এই নির্দেশ। যতই হাসিনা-আওয়ামী সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হচ্ছে, ততই তারা আইন ও নির্দেশ জারির মাধ্যমে তাদের প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতি জনগণকে গিলাতে চাইছে। আলোচিত শপথটিকে আমরা এখানে কিছুটা পর্যালোচনা করতে পারি। বলা হয়েছে-
ক) “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ ও বঞ্চণার বিরুদ্ধে এক রক্তক্ষয়ী মুক্তি সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে।” ১। “রক্তক্ষয়ী মুক্তি সংগ্রাম”। কেন “মুক্তিযুদ্ধ” লেখা হলো না? যা কি না আওয়ামীরা উঠতে বসতে জপ করে থাকে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জাতিগত সংগ্রামের দুটো পর্ব ছিল- ’৭১-এর আগে ও ’৭১-সালে। ’৭১-সালের সংগ্রামটা “মুক্তিযুদ্ধ” হিসেবেই পরিচিত। এখানে কোনটিকে বলা হয়েছে? শেখ মুজিব ’৭১-সালের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদান দূরের কথা, অংশই নেন নি। তিনি সজ্ঞানে সুচিন্তিত ভাবে পাকিস্তানি গণহত্যা শুরুর মুখে নিজ ঘরে বসে থেকে প্রথম প্রহরেই শত্রুর কাছে ধরা দেন। তার এ ভূমিকাকে আড়াল করার জন্যই এমন ধোঁয়াশা পূর্ণ বক্তব্য দেয়া হয়েছে। ২। পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ ও বঞ্চণার বিরুদ্ধে.......। বাংলাদেশের জনগণের উপর শুধু পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ ছিল তা নয়। ছিল মার্কিনের নেতৃত্বে সাম্রাজ্যবাদীদের তীব্র শোষণ ও নিয়ন্ত্রণ। সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম না করলে সেটা প্রকৃত মুক্তি সংগ্রাম হয় না। কোনো দেশ যদি সাম্রাজ্যবাদের রাহুগ্রাস থেকে মুক্ত না হয় তাহলে তা প্রকৃত স্বাধীনতাও অর্জন করে না। মুজিব ও আওয়ামী লীগ কখনই তেমন সংগ্রাম করে নি। ৩। পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ ও বঞ্চণার বিরুদ্ধে শুধু শেখ মুজিব বা আওয়ামী লীগই নেতৃত্ব দিয়েছে এমন বক্তব্যও সঠিক নয়। বরং মওলানা ভাসানীসহ মাওবাদী ও ব্যাপক বামপন্থিদের নেতৃত্বে পৃথকভাবেও সেটা হয়েছে। শুধু তাই নয়, সেটা মুজিব-আওয়ামী লীগের চেয়ে অনেক সঠিক ও ব্যাপক ছিল, কারণ, তারা একইসাথে অন্য সকল বিদেশি শোষণের বিরুদ্ধেও সংগ্রাম করেছেন, যা মুজিব-আওয়ামী লীগ কখনো করে নি।
খ) বিশ্বের বুকে বাঙালি জাতি প্রতিষ্ঠা করেছে তার স্বতন্ত্র জাতিসত্তা ১। পশ্চিম বঙ্গের বাংলা ভাষাভাষীরাও বাঙালি। সুতরাং বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অথবা শেখ মুজিবের নেতৃত্বে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির স্বতন্ত্র জাতিসত্তা প্রতিষ্ঠা হওয়ার বক্তব্য সঠিক নয়। এছাড়া বাঙালি জাতির স্বতন্ত্র জাতিসত্তা প্রতিষ্ঠা নতুন নয়। এ জাতির ইতিহাস কমপক্ষে এক হাজার বছরের পুরানো। ২। উপরের বক্তব্যে বাংলাদেশ রাষ্ট্রে বসবাসরত অন্য জাতিসত্তাগুলোর জনগণের অস্তিত্ব ও সংগ্রামকে অস্বীকার করা হয়েছে।
গ) শেখ মুজিবের আদর্শে উন্নত, সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার সোনার বাংলা গড়ে তুলবো ১। মুজিবের আদর্শটা কী? এক সময়ে একে “মুজিববাদ”ও বলা হতো। এখন সেটা বলছে না কেন? পাকিস্তান থেকে শুরু করলে শেখ মুজিবের আদর্শ বলা চলে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোকে- ক) পাকিস্তান আমলে ৬-দফা। যাতে পাকিস্তানের অধীনে বর্তমান বাংলাদেশের স্বায়ত্তশাসনের কথা ছিল। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর এ ‘আদর্শ’ এখন অবান্তর। খ) বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর রাষ্ট্রীয় “চার মূল নীতি”-কে মুজিবের আদর্শ বলা হতে পারে। এর একটি ছিল জাতীয়তাবাদ। কোন জাতীয়তাবাদ? বাঙালি জাতীয়তাবাদ। এতে অবাঙালিদের স্থান কোথায়? বাঙালি মুৎসুদ্দি বুর্জোয়া ও সামন্ততান্ত্রিক শ্রেণিগুলো জনগণের শত্রু। জাতীয়তাবাদ তাদেরই আদর্শ। দ্বিতীয় গণতন্ত্র। মুজিবের স্বীকৃতি মতে তার সারাজীবনের আদর্শ ছিল বহুদলীয় সংসদীয় গণতন্ত্র। আমাদের মতো দেশে যার প্রকৃত অর্থ হলো সাম্রাজ্যবাদের দালাল বুর্জোয়াদের শাসন। এটা নিপীড়িত জনগণের আদর্শ হবে কীভাবে? কিন্তু মুজিব আমলে সেটাও কার্যকর হয় নি। রক্ষীবাহিনীর হত্যা ও নিপীড়ন, নির্বাচন হাইজ্যাক, বিরোধী মতের সহিংস দমন, অন্তত ৩০ হাজার রাজনৈতিক কর্মী হত্যা- এসবই ছিল মুজিবী গণতন্ত্রের নমুনা। তৃতীয়ত সমাজতন্ত্র। মুজিব-নেতৃত্বে সমাজতন্ত্রের নামে অবাধ লুটপাটতন্ত্র কায়েম হয়েছিল। যে কারণে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। ৩ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। চরম বৈষম্যের সূচনা হয়েছিল। কে অস্বীকার করবে? চতুর্থত ধর্মনিরপেক্ষতা। এর আওয়ামী অনুশীলন হলো চারটি প্রধান ধর্মের পালন। এর চেয়ে বড় রসিকতা আর কী হতে পারে? গ) মুজিবের আরেকটি আদর্শ হলো শেষ জীবনের “বাকশাল”। একদলীয় শাসন। মুজিবকে আজীবন প্রেসিডেন্ট বানানো। শুধুমাত্র শেখ হাসিনা বাদে আজকের আওয়ামী নেতারা প্রায় কেউই বাকশালের কথা বলে না। বাকশালের একদলীয় স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে কেউ প্রকাশ্যে সমর্থনও করে না।
ঘ) “মহান সৃষ্টিকর্তা আমাকে শক্তি দিন” যারা স্রষ্টায় বিশ্বাস করেন, তারা নিজ নিজ ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে নিজ নিজ কাজে এমন বলতেই পারেন। কিন্তু একটি “ধর্মনিরপেক্ষ” রাষ্ট্রে এই দোয়ার অর্থ কী? বহু মানুষ সৃষ্টি ও সৃষ্টিকর্তা (অথবা কর্ত্রী) সম্পর্কে ভিন্ন বিশ্বাস ও চেতনা ধারণ করেন। তাদেরকে কেন বাধ্য করা হবে এই শপথ নিতে। আওয়ামী লীগ যে একদিকে ধর্মকে রাজনীতিতে ব্যবহার করে, এবং একইসাথে নিজেদেরকে ধর্মনিরপেক্ষ অসাম্প্রদায়িক বলে মিথ্যা প্রচার দেয় তারই দৃষ্টান্ত এটা।
* সবমিলিয়ে রাষ্ট্রের কোনো অধিকার নেই কোমলমতি শিশুদের উপর একটি দলীয় রাজনীতি, ইতিহাসবিকৃতি ও ধর্মবাদী বিশ্বাসকে চাপিয়ে দেয়ার। হাসিনা-আওয়ামী লীগ এটা করার মাধ্যমে তার ফ্যাসিবাদী আদর্শকেই প্রকাশ করছে। সকল জনগণ ও প্রগতিশীল মানুষের উচিত একে বর্জন করা।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
শপথের নামে শিক্ষার্থীদের মগজ ধোলাই-এর আওয়ামী ফ্যাসিবাদী কর্মসূচি
গত ১৬ ডিসেম্বর ২০২১-এ শেখ হাসিনা এর সূচনা করেন। সারা দেশের জনগণকে দিয়ে এ শপথ পাঠ করানোর চেষ্টা করলেও খুব কম মানুষই তাতে অংশ নেন। এর পর সরকার নির্দেশ জারি করেছে, সকল বিদ্যালয়ে প্রতিদিনের কর্মসূচি শুরুর আগে যে শপথ পাঠ করানো হয় তাতে সরকার নির্ধারিত বক্তব্যটি পড়াতে হবে। কোমলমতি শিশুদেরকে আওয়ামী রাজনীতি ও তার মিথ্যা ইতিহাস দ্বারা মগজ ধোলাই করার এক ফ্যাসিবাদী কর্মসূচি হলো এই নির্দেশ। যতই হাসিনা-আওয়ামী সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হচ্ছে, ততই তারা আইন ও নির্দেশ জারির মাধ্যমে তাদের প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতি জনগণকে গিলাতে চাইছে। আলোচিত শপথটিকে আমরা এখানে কিছুটা পর্যালোচনা করতে পারি। বলা হয়েছে-
ক) “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ ও বঞ্চণার বিরুদ্ধে এক রক্তক্ষয়ী মুক্তি সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে।” ১। “রক্তক্ষয়ী মুক্তি সংগ্রাম”। কেন “মুক্তিযুদ্ধ” লেখা হলো না? যা কি না আওয়ামীরা উঠতে বসতে জপ করে থাকে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জাতিগত সংগ্রামের দুটো পর্ব ছিল- ’৭১-এর আগে ও ’৭১-সালে। ’৭১-সালের সংগ্রামটা “মুক্তিযুদ্ধ” হিসেবেই পরিচিত। এখানে কোনটিকে বলা হয়েছে? শেখ মুজিব ’৭১-সালের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদান দূরের কথা, অংশই নেন নি। তিনি সজ্ঞানে সুচিন্তিত ভাবে পাকিস্তানি গণহত্যা শুরুর মুখে নিজ ঘরে বসে থেকে প্রথম প্রহরেই শত্রুর কাছে ধরা দেন। তার এ ভূমিকাকে আড়াল করার জন্যই এমন ধোঁয়াশা পূর্ণ বক্তব্য দেয়া হয়েছে। ২। পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ ও বঞ্চণার বিরুদ্ধে.......। বাংলাদেশের জনগণের উপর শুধু পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ ছিল তা নয়। ছিল মার্কিনের নেতৃত্বে সাম্রাজ্যবাদীদের তীব্র শোষণ ও নিয়ন্ত্রণ। সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম না করলে সেটা প্রকৃত মুক্তি সংগ্রাম হয় না। কোনো দেশ যদি সাম্রাজ্যবাদের রাহুগ্রাস থেকে মুক্ত না হয় তাহলে তা প্রকৃত স্বাধীনতাও অর্জন করে না। মুজিব ও আওয়ামী লীগ কখনই তেমন সংগ্রাম করে নি। ৩। পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ ও বঞ্চণার বিরুদ্ধে শুধু শেখ মুজিব বা আওয়ামী লীগই নেতৃত্ব দিয়েছে এমন বক্তব্যও সঠিক নয়। বরং মওলানা ভাসানীসহ মাওবাদী ও ব্যাপক বামপন্থিদের নেতৃত্বে পৃথকভাবেও সেটা হয়েছে। শুধু তাই নয়, সেটা মুজিব-আওয়ামী লীগের চেয়ে অনেক সঠিক ও ব্যাপক ছিল, কারণ, তারা একইসাথে অন্য সকল বিদেশি শোষণের বিরুদ্ধেও সংগ্রাম করেছেন, যা মুজিব-আওয়ামী লীগ কখনো করে নি।
খ) বিশ্বের বুকে বাঙালি জাতি প্রতিষ্ঠা করেছে তার স্বতন্ত্র জাতিসত্তা ১। পশ্চিম বঙ্গের বাংলা ভাষাভাষীরাও বাঙালি। সুতরাং বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অথবা শেখ মুজিবের নেতৃত্বে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির স্বতন্ত্র জাতিসত্তা প্রতিষ্ঠা হওয়ার বক্তব্য সঠিক নয়। এছাড়া বাঙালি জাতির স্বতন্ত্র জাতিসত্তা প্রতিষ্ঠা নতুন নয়। এ জাতির ইতিহাস কমপক্ষে এক হাজার বছরের পুরানো। ২। উপরের বক্তব্যে বাংলাদেশ রাষ্ট্রে বসবাসরত অন্য জাতিসত্তাগুলোর জনগণের অস্তিত্ব ও সংগ্রামকে অস্বীকার করা হয়েছে।
গ) শেখ মুজিবের আদর্শে উন্নত, সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার সোনার বাংলা গড়ে তুলবো ১। মুজিবের আদর্শটা কী? এক সময়ে একে “মুজিববাদ”ও বলা হতো। এখন সেটা বলছে না কেন? পাকিস্তান থেকে শুরু করলে শেখ মুজিবের আদর্শ বলা চলে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোকে- ক) পাকিস্তান আমলে ৬-দফা। যাতে পাকিস্তানের অধীনে বর্তমান বাংলাদেশের স্বায়ত্তশাসনের কথা ছিল। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর এ ‘আদর্শ’ এখন অবান্তর। খ) বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর রাষ্ট্রীয় “চার মূল নীতি”-কে মুজিবের আদর্শ বলা হতে পারে। এর একটি ছিল জাতীয়তাবাদ। কোন জাতীয়তাবাদ? বাঙালি জাতীয়তাবাদ। এতে অবাঙালিদের স্থান কোথায়? বাঙালি মুৎসুদ্দি বুর্জোয়া ও সামন্ততান্ত্রিক শ্রেণিগুলো জনগণের শত্রু। জাতীয়তাবাদ তাদেরই আদর্শ। দ্বিতীয় গণতন্ত্র। মুজিবের স্বীকৃতি মতে তার সারাজীবনের আদর্শ ছিল বহুদলীয় সংসদীয় গণতন্ত্র। আমাদের মতো দেশে যার প্রকৃত অর্থ হলো সাম্রাজ্যবাদের দালাল বুর্জোয়াদের শাসন। এটা নিপীড়িত জনগণের আদর্শ হবে কীভাবে? কিন্তু মুজিব আমলে সেটাও কার্যকর হয় নি। রক্ষীবাহিনীর হত্যা ও নিপীড়ন, নির্বাচন হাইজ্যাক, বিরোধী মতের সহিংস দমন, অন্তত ৩০ হাজার রাজনৈতিক কর্মী হত্যা- এসবই ছিল মুজিবী গণতন্ত্রের নমুনা। তৃতীয়ত সমাজতন্ত্র। মুজিব-নেতৃত্বে সমাজতন্ত্রের নামে অবাধ লুটপাটতন্ত্র কায়েম হয়েছিল। যে কারণে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। ৩ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। চরম বৈষম্যের সূচনা হয়েছিল। কে অস্বীকার করবে? চতুর্থত ধর্মনিরপেক্ষতা। এর আওয়ামী অনুশীলন হলো চারটি প্রধান ধর্মের পালন। এর চেয়ে বড় রসিকতা আর কী হতে পারে? গ) মুজিবের আরেকটি আদর্শ হলো শেষ জীবনের “বাকশাল”। একদলীয় শাসন। মুজিবকে আজীবন প্রেসিডেন্ট বানানো। শুধুমাত্র শেখ হাসিনা বাদে আজকের আওয়ামী নেতারা প্রায় কেউই বাকশালের কথা বলে না। বাকশালের একদলীয় স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে কেউ প্রকাশ্যে সমর্থনও করে না।
ঘ) “মহান সৃষ্টিকর্তা আমাকে শক্তি দিন” যারা স্রষ্টায় বিশ্বাস করেন, তারা নিজ নিজ ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে নিজ নিজ কাজে এমন বলতেই পারেন। কিন্তু একটি “ধর্মনিরপেক্ষ” রাষ্ট্রে এই দোয়ার অর্থ কী? বহু মানুষ সৃষ্টি ও সৃষ্টিকর্তা (অথবা কর্ত্রী) সম্পর্কে ভিন্ন বিশ্বাস ও চেতনা ধারণ করেন। তাদেরকে কেন বাধ্য করা হবে এই শপথ নিতে। আওয়ামী লীগ যে একদিকে ধর্মকে রাজনীতিতে ব্যবহার করে, এবং একইসাথে নিজেদেরকে ধর্মনিরপেক্ষ অসাম্প্রদায়িক বলে মিথ্যা প্রচার দেয় তারই দৃষ্টান্ত এটা।
* সবমিলিয়ে রাষ্ট্রের কোনো অধিকার নেই কোমলমতি শিশুদের উপর একটি দলীয় রাজনীতি, ইতিহাসবিকৃতি ও ধর্মবাদী বিশ্বাসকে চাপিয়ে দেয়ার। হাসিনা-আওয়ামী লীগ এটা করার মাধ্যমে তার ফ্যাসিবাদী আদর্শকেই প্রকাশ করছে। সকল জনগণ ও প্রগতিশীল মানুষের উচিত একে বর্জন করা।
আরও খবর
- শনি
- রোব
- সোম
- মঙ্গল
- বুধ
- বৃহ
- শুক্র