• শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ৩ কার্তিক ১৪৩২
  • ঢাকা, বাংলাদেশ

পুস্তক পরিচয়

“মার্কসীয় দর্শন দ্বান্দ্বিক ও ঐতিহাসিক বস্তুবাদ”

পুস্তক পরিচয়

“মার্কসীয় দর্শন দ্বান্দ্বিক ও ঐতিহাসিক বস্তুবাদ”

  আন্দোলন প্রতিবেদন  

শুক্রবার, ২১ জুন ২০২৪  |  অনলাইন সংস্করণ

মাওবাদী সাহিত্যের অনুবাদক হিসেবে পরিচিত সরকার নজরুল ইসলাম লিখিত “মার্কসীয় দর্শন দ্বান্দ্বিক ও ঐতিহাসিক বস্তুবাদ” নামের  পুস্তকটি অক্টোবর/২৩ প্রকাশিত হয়েছে। কমিউনিস্ট আন্দোলনের পঁাচ মহান নেতা মার্কস-এঙ্গেলস-লেনিন-স্টালিন-মাওসেতুঙ-এর যুক্ত ছবি সম্বলিত চমৎকার প্রচ্ছদের বইটি।

এই পাঁচ মাথার প্রচ্ছদই বলে দিচ্ছে লেখক বইটিতে মার্কসবাদ বলতে মার্কসবাদ-লেনিনবাদ-মাওবাদ (মালেমা)–কে অখণ্ড দর্শন হিসেবে তুলে ধরেছেন। শুধু তাই নয়, দার্শনিক ক্ষেত্রে মাওবাদের অংশ প্রধান দ্বন্দ্ব ও তার প্রধান দিক এবং মাওবাদের সর্বোচ্চ বিকাশ মহান সর্বহারা সাংস্কৃতিক বিপ্লব (জিপিসিআর)-কেও তিনি আলোচনা করেছেন।

মালেমা মতবাদ ও দর্শনের স্রষ্টাদের অনেক লেখাই বাংলা অনুবাদে পাওয়া যায়। তাসত্ত্বেও এই বইয়ের বিশেষত্ব হচ্ছে আমাদের দেশের বাস্তবতায় এই দর্শন প্রয়োগ করতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের ভুল লাইন কিভাবে সংশোধনবাদে অধঃপতিত হয়েছে তা মিলিয়ে লেখক আলোচনা করেছেন। যেমন– আমাদের দেশে নয়া ট্রটস্কিবাদী হোক্সাপন্থাকে কীভাবে সংগ্রাম করে মাওবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা তুলে ধরেছেন।

সমাজতান্ত্রিক-কমিউনিস্ট আন্দোলনে সকল মহলের প্রশ্ন মহামতি লেনিনের প্রতিষ্ঠিত প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র রাশিয়া এবং মাওসেতুঙের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত চীন কেন সামাজিক সাম্রাজ্যবাদে অধঃপতিত হলো? লেখক মালেমার ভিত্তিতে এই বইয়ে সংক্ষেপে সেই সব প্রশ্নের দার্শনিক ও রাজনৈতিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করেছেন। একই সাথে আজকের বিশ্ব রাজনীতিতে আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্ব এবং সমাজ বিকাশের ধারাবাহিকতায় সামন্তবাদ বিশেষত পঁুজিবাদী শোষণের বিভিন্ন ধরনের জীবন্ত উদাহরণ দিয়ে ব্যাখা করেছেন।

বইটিতে দু’টি পয়েন্টে সীমাবদ্ধতা রয়েছে বলে আমাদের মনে হয়েছে। এক– বইটি পুঁজিবাদী শোষণের বিভিন্ন দিক আলোচনা করলেও সাম্রাজ্যবাদ-নিপীড়িত তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে আমলা-মুৎসুদ্দি বুর্জোয়া শ্রেণির বিকাশ সম্পর্কে আলোচনা করেনি। দুই– ‘ইতিহাসের দৃষ্টিভঙ্গি’ অধ্যায়ে পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর সাথে পূর্ব বাংলার জনগণের জাতীয় দ্বন্দ্বকে “মূলদ্বন্দ্ব” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। “মূলদ্বন্দ্ব” শব্দটির সাথে “মৌলিক দ্বন্দ্ব”, “প্রধান দ্বন্দ্ব” এগুলোও এদেশে প্রচলিত ও এসব নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। লেখক যেভাবে “মূলদ্বন্দ্ব” উত্থাপন করেছেন তাতে তাকে প্রধান দ্বন্দ্ব ভাবারও অবকাশ রয়েছে। পাকিস্তানি জাতীয় নিপীড়কদের সাথে পূর্ব বাংলার জাতি-জনগণের জাতিগত দ্বন্দ্বটির বাস্তব অস্তিত্ব ছিল সেটা নিয়ে কখনোই কোনো বিতর্ক ছিল না। কিন্তু প্রশ্ন হলো তাকে মূলদ্বন্দ্ব বা প্রধান দ্বন্দ্ব বলবো কিনা, বা কখন থেকে সেটা প্রধান দ্বন্দ্ব হলো– ইত্যাদি। লেখকের মূল আলোচনা ঠিক রেখে এখানে শব্দচয়ন করলে সেটা ভালো হতো।

বইটি প্রকাশ করেছে প্রগতিশীল প্রকাশক ‘খনন’। ১৫১ পৃষ্ঠার বই। মূল্য ৩০০ টাকা। বইটি মালেমা অনুসারীদের জন্য ইতিবাচক হওয়ায় পাঠ্য তালিকায় রাখা যায়।

পুস্তক পরিচয়

“মার্কসীয় দর্শন দ্বান্দ্বিক ও ঐতিহাসিক বস্তুবাদ”

 আন্দোলন প্রতিবেদন 
শুক্রবার, ২১ জুন ২০২৪  |  অনলাইন সংস্করণ

মাওবাদী সাহিত্যের অনুবাদক হিসেবে পরিচিত সরকার নজরুল ইসলাম লিখিত “মার্কসীয় দর্শন দ্বান্দ্বিক ও ঐতিহাসিক বস্তুবাদ” নামের  পুস্তকটি অক্টোবর/২৩ প্রকাশিত হয়েছে। কমিউনিস্ট আন্দোলনের পঁাচ মহান নেতা মার্কস-এঙ্গেলস-লেনিন-স্টালিন-মাওসেতুঙ-এর যুক্ত ছবি সম্বলিত চমৎকার প্রচ্ছদের বইটি।

এই পাঁচ মাথার প্রচ্ছদই বলে দিচ্ছে লেখক বইটিতে মার্কসবাদ বলতে মার্কসবাদ-লেনিনবাদ-মাওবাদ (মালেমা)–কে অখণ্ড দর্শন হিসেবে তুলে ধরেছেন। শুধু তাই নয়, দার্শনিক ক্ষেত্রে মাওবাদের অংশ প্রধান দ্বন্দ্ব ও তার প্রধান দিক এবং মাওবাদের সর্বোচ্চ বিকাশ মহান সর্বহারা সাংস্কৃতিক বিপ্লব (জিপিসিআর)-কেও তিনি আলোচনা করেছেন।

মালেমা মতবাদ ও দর্শনের স্রষ্টাদের অনেক লেখাই বাংলা অনুবাদে পাওয়া যায়। তাসত্ত্বেও এই বইয়ের বিশেষত্ব হচ্ছে আমাদের দেশের বাস্তবতায় এই দর্শন প্রয়োগ করতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের ভুল লাইন কিভাবে সংশোধনবাদে অধঃপতিত হয়েছে তা মিলিয়ে লেখক আলোচনা করেছেন। যেমন– আমাদের দেশে নয়া ট্রটস্কিবাদী হোক্সাপন্থাকে কীভাবে সংগ্রাম করে মাওবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা তুলে ধরেছেন।

সমাজতান্ত্রিক-কমিউনিস্ট আন্দোলনে সকল মহলের প্রশ্ন মহামতি লেনিনের প্রতিষ্ঠিত প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র রাশিয়া এবং মাওসেতুঙের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত চীন কেন সামাজিক সাম্রাজ্যবাদে অধঃপতিত হলো? লেখক মালেমার ভিত্তিতে এই বইয়ে সংক্ষেপে সেই সব প্রশ্নের দার্শনিক ও রাজনৈতিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করেছেন। একই সাথে আজকের বিশ্ব রাজনীতিতে আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্ব এবং সমাজ বিকাশের ধারাবাহিকতায় সামন্তবাদ বিশেষত পঁুজিবাদী শোষণের বিভিন্ন ধরনের জীবন্ত উদাহরণ দিয়ে ব্যাখা করেছেন।

বইটিতে দু’টি পয়েন্টে সীমাবদ্ধতা রয়েছে বলে আমাদের মনে হয়েছে। এক– বইটি পুঁজিবাদী শোষণের বিভিন্ন দিক আলোচনা করলেও সাম্রাজ্যবাদ-নিপীড়িত তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে আমলা-মুৎসুদ্দি বুর্জোয়া শ্রেণির বিকাশ সম্পর্কে আলোচনা করেনি। দুই– ‘ইতিহাসের দৃষ্টিভঙ্গি’ অধ্যায়ে পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর সাথে পূর্ব বাংলার জনগণের জাতীয় দ্বন্দ্বকে “মূলদ্বন্দ্ব” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। “মূলদ্বন্দ্ব” শব্দটির সাথে “মৌলিক দ্বন্দ্ব”, “প্রধান দ্বন্দ্ব” এগুলোও এদেশে প্রচলিত ও এসব নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। লেখক যেভাবে “মূলদ্বন্দ্ব” উত্থাপন করেছেন তাতে তাকে প্রধান দ্বন্দ্ব ভাবারও অবকাশ রয়েছে। পাকিস্তানি জাতীয় নিপীড়কদের সাথে পূর্ব বাংলার জাতি-জনগণের জাতিগত দ্বন্দ্বটির বাস্তব অস্তিত্ব ছিল সেটা নিয়ে কখনোই কোনো বিতর্ক ছিল না। কিন্তু প্রশ্ন হলো তাকে মূলদ্বন্দ্ব বা প্রধান দ্বন্দ্ব বলবো কিনা, বা কখন থেকে সেটা প্রধান দ্বন্দ্ব হলো– ইত্যাদি। লেখকের মূল আলোচনা ঠিক রেখে এখানে শব্দচয়ন করলে সেটা ভালো হতো।

বইটি প্রকাশ করেছে প্রগতিশীল প্রকাশক ‘খনন’। ১৫১ পৃষ্ঠার বই। মূল্য ৩০০ টাকা। বইটি মালেমা অনুসারীদের জন্য ইতিবাচক হওয়ায় পাঠ্য তালিকায় রাখা যায়।

আরও খবর
 
শনি
রোব
সোম
মঙ্গল
বুধ
বৃহ
শুক্র