শহিদুল হত্যা ও শ্রমিক শ্রেণির করণীয়
শহিদুল ছিলেন বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল শ্রমিক ফেডারেশনের গাজীপুর জেলা শাখার সভাপতি। তিনি গত ২৫ জুন, ২০২৩-এ টঙ্গীর প্রিন্স জ্যাকার্ড সোয়েটার লিমিটেডের সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত হন।
গত মে মাসের বেতন ও ঈদুল আজহার বোনাস দিতে তালবাহানা করেছিল মালিকপক্ষ। ২১ জুন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় ২৫ জুন সব পাওনা পরিশোধের কথা দেয় মালিকপক্ষ।
কিন্তু ওই দিন দুপুর পর্যন্ত বেতন পাননি শ্রমিকেরা। বিকেলে মালিকশ্রেণির ভাড়াটে, ভুয়া শ্রমিক নেতা মাজাহারুল মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। মালিকপক্ষ মাজাহারুলকে জানায় ওই দিন বেতন দিবে না, পরের দিন দেবে। মাজাহারুল তার পক্ষের শ্রমিকদের বিষয়টি জানালে তারা মেনে নেন। কিন্তু সন্ধ্যায় শহিদুল তার পক্ষের শ্রমিকনেতাদের নিয়ে সেখানে গেলে মাজাহারুল ক্ষিপ্ত হন এবং তার নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলনসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানান। মাজহারুল মূলত শ্রমিকনেতা বা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের কর্মীর ট্যাগ লাগিয়ে গোপনে মালিকদের সাথে আতাঁত করে মালিকদের ভাড়াটে চেলা হিসেবে কাজ করে। বড় বড় গার্মেন্টস মালিকরা এখন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের সাথে সাথে ভাড়াটে শ্রমিক নেতাদেরও লালন করছে।
শহিদুল হত্যা বাংলাদেশে প্রকৃত শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে মালিক পক্ষের ঘৃণ্য বর্বরতার একটি নিকৃষ্ট উদাহরণ। মালিকশ্রেণি বোনাস, বেতন আটকে রাখবে, কিন্তু কোনো শ্রমিক তার পাওনা চাইলেই তার প্রাণ যাবে। শহিদুল হত্যা তার জ্বলন্ত ঘটনা। শ্রমিকদের নিজেদের মতো নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রত্যেক কারখানায় মালিকরা তাদের ভাড়াটিয়া লোক রাখে। এমনকি মালিকের স্বার্থ রক্ষাকারী ট্রেড ইউনিয়ন পর্যন্ত তৈরি করে। তাই গার্মেন্টস সেক্টরে ভূঁইফোড় ট্রেড ইউনিয়নের সংখ্যা বিশাল। শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষাকারী প্রকৃত ট্রেড ইউনিয়ন খুবই কম।
এছাড়াও আছে এনজিওদের তৎপরতা। যারা নানা রকম সেবা দিয়ে, আশু অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধান করে শ্রমিকদের নিজেদের দখলে রেখে তাদের আসল কর্তব্য থেকে দূরে রাখতে সচেষ্ট। সামান্য দাবিদাওয়া ভিত্তিক আন্দোলনেও এনজিও মার্কা প্রতিবাদ অনুষ্ঠানেই তাদের সীমিত রাখে। শ্রমিকশ্রেণি যাতে তাদের ঐতিহাসিক বিপ্লবী কর্তব্য সম্পর্কে কখনই সচেতন না হতে পারে সে সম্পর্কে এনজিওগুলো সদা সতর্ক থাকে।
এজন্য শ্রমিকদেরকে মালিক স্বার্থ রক্ষাকারী শ্রমিক সংগঠন এবং এনজিও মার্কা ট্রেড ইউনিয়নের বিপরীতে প্রকৃত শ্রমিক স্বার্থ রক্ষাকারী নিজস্ব নেতৃত্বে শক্তিশালী ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে তুলতে হবে। প্রতারক নেতাদের প্রত্যাখ্যান করতে হবে। একইসাথে মালিকশ্রেণির স্বার্থরক্ষাকারী সাম্রাজ্যবাদী-পুঁজিবাদী ব্যবস্থাকে উচ্ছেদের বিপ্লবী সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
শহিদুল হত্যা ও শ্রমিক শ্রেণির করণীয়
শহিদুল ছিলেন বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল শ্রমিক ফেডারেশনের গাজীপুর জেলা শাখার সভাপতি। তিনি গত ২৫ জুন, ২০২৩-এ টঙ্গীর প্রিন্স জ্যাকার্ড সোয়েটার লিমিটেডের সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত হন।
গত মে মাসের বেতন ও ঈদুল আজহার বোনাস দিতে তালবাহানা করেছিল মালিকপক্ষ। ২১ জুন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় ২৫ জুন সব পাওনা পরিশোধের কথা দেয় মালিকপক্ষ।
কিন্তু ওই দিন দুপুর পর্যন্ত বেতন পাননি শ্রমিকেরা। বিকেলে মালিকশ্রেণির ভাড়াটে, ভুয়া শ্রমিক নেতা মাজাহারুল মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। মালিকপক্ষ মাজাহারুলকে জানায় ওই দিন বেতন দিবে না, পরের দিন দেবে। মাজাহারুল তার পক্ষের শ্রমিকদের বিষয়টি জানালে তারা মেনে নেন। কিন্তু সন্ধ্যায় শহিদুল তার পক্ষের শ্রমিকনেতাদের নিয়ে সেখানে গেলে মাজাহারুল ক্ষিপ্ত হন এবং তার নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলনসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানান। মাজহারুল মূলত শ্রমিকনেতা বা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের কর্মীর ট্যাগ লাগিয়ে গোপনে মালিকদের সাথে আতাঁত করে মালিকদের ভাড়াটে চেলা হিসেবে কাজ করে। বড় বড় গার্মেন্টস মালিকরা এখন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের সাথে সাথে ভাড়াটে শ্রমিক নেতাদেরও লালন করছে।
শহিদুল হত্যা বাংলাদেশে প্রকৃত শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে মালিক পক্ষের ঘৃণ্য বর্বরতার একটি নিকৃষ্ট উদাহরণ। মালিকশ্রেণি বোনাস, বেতন আটকে রাখবে, কিন্তু কোনো শ্রমিক তার পাওনা চাইলেই তার প্রাণ যাবে। শহিদুল হত্যা তার জ্বলন্ত ঘটনা। শ্রমিকদের নিজেদের মতো নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রত্যেক কারখানায় মালিকরা তাদের ভাড়াটিয়া লোক রাখে। এমনকি মালিকের স্বার্থ রক্ষাকারী ট্রেড ইউনিয়ন পর্যন্ত তৈরি করে। তাই গার্মেন্টস সেক্টরে ভূঁইফোড় ট্রেড ইউনিয়নের সংখ্যা বিশাল। শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষাকারী প্রকৃত ট্রেড ইউনিয়ন খুবই কম।
এছাড়াও আছে এনজিওদের তৎপরতা। যারা নানা রকম সেবা দিয়ে, আশু অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধান করে শ্রমিকদের নিজেদের দখলে রেখে তাদের আসল কর্তব্য থেকে দূরে রাখতে সচেষ্ট। সামান্য দাবিদাওয়া ভিত্তিক আন্দোলনেও এনজিও মার্কা প্রতিবাদ অনুষ্ঠানেই তাদের সীমিত রাখে। শ্রমিকশ্রেণি যাতে তাদের ঐতিহাসিক বিপ্লবী কর্তব্য সম্পর্কে কখনই সচেতন না হতে পারে সে সম্পর্কে এনজিওগুলো সদা সতর্ক থাকে।
এজন্য শ্রমিকদেরকে মালিক স্বার্থ রক্ষাকারী শ্রমিক সংগঠন এবং এনজিও মার্কা ট্রেড ইউনিয়নের বিপরীতে প্রকৃত শ্রমিক স্বার্থ রক্ষাকারী নিজস্ব নেতৃত্বে শক্তিশালী ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে তুলতে হবে। প্রতারক নেতাদের প্রত্যাখ্যান করতে হবে। একইসাথে মালিকশ্রেণির স্বার্থরক্ষাকারী সাম্রাজ্যবাদী-পুঁজিবাদী ব্যবস্থাকে উচ্ছেদের বিপ্লবী সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে।
আরও খবর
- শনি
- রোব
- সোম
- মঙ্গল
- বুধ
- বৃহ
- শুক্র